আযান ও একামতের অর্থ
আযান অর্থ সাবধান করা, অবহিত করা, ঘোষণা
করা। শরীয়তের পরিভাষায় জামায়াতে নামাযের জন্যে-মানুষ জমায়েত করার উদ্দেশ্যে
কিছু বিশিষ্ট শব্দের মাধ্যমে ডাক দেয়া এবং ঘোষণা করার নাম আযান। প্রথম
প্রথম ওয়াক্ত অনুমান করে মানুষ স্বয়ং মসজিদে হাযির হতো এবং জামায়াতে নামায
পড়তো। কিন্তু মুসলমানের সংখ্যা যখন ক্রমশঃ বাড়তে থাকে এবং বিভিন্ন কাজে
ব্যস্ত থাকা বহু সংখ্যক লোক মুসলমান হওয়া শুরু করে, তখন অনুভব করা হলো যে,
নামাযের জন্যে ঘোষণা দেয়া হোক। অতএব হিজরী প্রথম বছরে নবী (স) আযানের তরীকা
শিক্ষা দিলেন।
একামতের অর্থ হলো দাঁড় করানো। ইসলামের
পরিভাষা হিসাবে জামায়াত শুরু হওয়ার আগে আযানের কথাগুলো পুনরায় বলা এবং এ
কথা ঘোষণা করা যে, জামায়াত দাঁড়িয়ে যাচ্ছে। এ জন্যে একামতে (****) এর পর :
(*****) বলা হয় অর্থাৎ নামায দাঁড়িয়ে গেছে বা মানুষ নামাযের জন্যে
দাঁড়িয়েছে।
আযানের ফযীলত
আযান উম্মতে মুসলেমার বিশিষ্ট আলামত। হাদীসে আযানের ফযীলত ও মহত্ব সম্পর্কে অনেক কথা বলা হয়েছে। নিম্নে কিছু উদ্ধৃত করা হলো।
নবী (স) বলেছেন-
১. আম্বিয়া এবং শহীদানের পর আযানদানকারী বেহেশতে প্রবেশ করবে। (ইলমুল ফেকাহ)
২. আযান যতদূর পর্যন্ত পৌঁছে এবং যারাই তা
শুনে (মানুষ হোক বা জ্বিন হোক) তারা কেয়ামতের দিনে আযানদানকারীর ঈমানের
সাক্ষ্যদান করবেন (বুখারী)।
৩. যে ব্যক্তি ক্রমাগত সাত বছর আযান দেবে
এবং তার জন্যে আখেরাতের প্রতিদান চাইবে তার জন্যে জাহান্নাম থেকে অব্যাহতি
লিখে দেয়া হয়। (আবু দাউদ, তিরমিযী)।
৪. কেয়ামতে আযানদানকারীদের ঘার উন্নত হবে। অর্থাৎ সে দিন তাদেরকে বিশিষ্ট মর্যাদায় ভূষিত করা হবে। –(মুসলিম)
৫. আযানের সময় শয়তানে মনে ভয় ও ত্রাস
সৃষ্টি হয় এবং সে চরম ভগ্রোৎসাহে পলায়ন করে। যতদূর পর্যন্ত আযানের ধ্বনি
পৌছে ততদূর পর্যন্ত সে থাকতে পারে না। (বুখারী ও মুসলিম)।
৬. যেখানে আযান দেয়া হয় সেখানে আল্লাহর রহমত হয় এবং সে স্থান আযাব এবং বিপদ থেকে নিরাপদ থাকে। (তাবরানী)।
আযান ও একামতের মসনূন তরীকা
আযানের মসনূন তরীকা হচ্ছে এই যে, মুয়াযযিন
(আযানদানকারী) পাক সাফ হয়ে কোন উঁচু স্থানে কেবলার দিকে মুখ করে দাঁড়াবে
এবং দুই কানের মধ্যে শাহাদাত আংগুলিদ্বয় প্রবেশ করিয়ে উঁচু গলায় নিম্নের
কথাগুলো বলবে:
(الله اكبر) (আল্লাহ সবচেয়ে বড়)-চার বার।
(اشهد ان لا اله الا الله) (আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই।) –দুবার।
(اشهد ان محمد الرسول الله) আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মদ (স) আল্লাহর রসূল) –দু’বার।
(حي على الصلاة)(এসো নামাযের দিকে)-দু’বার
(حي على الفلاح)(এসো কল্যাণ ও কৃতকার্যতার দিকে)- দু’বার।
(الله اكبر) (আল্লাহ সবচেয়ে বড়)-দু’বার
(لا اله الا الله) (আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই)-একবার।
আল্লাহ আকবার দুবার বলার পর এবং অন্যান্য কালেমাগুলো বলার পর পর এতটা সময় থামতে হবে যাতে করে শ্রোতাগণ তার জবাব দিতে পারে-
অর্থাৎ তারাও তা উচ্চারণ করতে পারে। (حي على الصلاة) বলার সময় ডান দিকে এবং (حي على الفلاح) বলার সময় বামদিকে মুখ ফিরাবে।
একামতের সময় ঐ কথাগুলোই ততোবার করে বলতে
হবে। শুধু পার্থক্য এই যে, এ কথাগুলা নামাযের কাতারে দাঁড়িযে নীচু গলায়
বলতে হবে। আর (حي على الفلاح) এর পর দু’বার (قد قامت الصلاةُ) বলবে।
আযানের জবাব ও দোয়া
১. যে ব্যক্তিই আযান শুনতে পাবে তার জন্যে
জবাব দেয়া ওয়াজেব। অর্থাৎ মুয়াযযিন যা বলতে তাই বলতে হবে। তবে (****) এবং
(****) বলার পর বলতে হবে (****) নবী (স) বলেন, যখন মুয়াযযিন বলবে (***)
এবং তোমাদের মধ্যে কেউ বলবে (***) তারপর (***) তারপর মুয়াযযিন যখন বলবে
(****) এবং জবাবদানকারী বলবে (****) তারপর মুয়াযযিন যখন বলবে (***) এবং
জবাবদানকারী বলবে (***) তারপর মুয়াযযিন যখন বলবে (****) জবাবদানকারী বলবে
(****) তারপর মুয়াযযিন যখন বলতে ((******) এবং জবাবদানকারী …….তখন যে
ব্যক্তি আযানের জবাবে এ কথাগুলো বলবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।(মুসলিম)
২. ফজরের আযানের সময় যখন মুয়াযযিন (****)
(ঘুম থেকে নামায উত্তম) বলবে তখন শ্রোতা বলবে (****) তুমি সত্য কথাই বলেছ
এবং মংগলের কথা বলেছো)।
৩. আযান শুনার পর দরুদ শরীফ পড়বে। আবদুল্লাহ বিন ওমর (রা) এবং বর্ণনা, নবী (স) বলেন, তোমাদের মধ্যে কেউ যখন আমার নাম শুনবে
****১ আল্লাহর মদদ ব্যতীত না আমরা গুনাহ
থেকে বাঁচতে আর না কোন নেক আমল করতে পারি। (***) মব্দের অর্্যথ গুনাহ থেকে
বাঁচার শক্তি এবং (****) শব্দের মর্ম আল্লাহর আনুগত্য ও ফরমাযদারি করার
শক্তি।
যায়াযযিন যা বলবে তা সে নিজও বলবে এবং
আমার উপর দরূদ পড়বে। কারণ যে আমার উপর একবার দরূদ পড়বে আল্লাহ তার উপর দশটি
রহমত নাযিল করেন। এ ভিত্তিতে ওলামায়ে কেরাম বলেন, (***) প্রথমবার শুনে
একবার (****) বলা মুস্তাহাব (ইলমুল ফেকাহ, ২য় খন্ড)।
৪. আযান শুনার পর নিম্নের দোয়া পড়বে। হযরত
জাবের (রা) বলেন, নবী (স) বলেছেন, যে ব্যক্তি আযান শুনার পর এ দোয়া পড়বে
সে আমার শাফায়াতের হকদার হবে (বুখারী)।
اَللَّهُمَّ رَبَّ هٰذِهِ الدَّعْوَةِ التَّامَّةِ، وَالصَّلاَةِ الْقَائِمَةِ، آتِ مُحَمَّدًانِ الْوَسِيْلَةَ وَالْفَضِيْلَةَ، وَابْعَثْهُ
مَقَامًا مَّحْمُوْدًا الَّذِىْ وَعَدْتَهُ -
হে আল্লাহ এ কামেল দাওয়াত ও আসন্ন নামাযের
মালিক, মুহাম্মদ (স) কে ‘অীসলা’ দান কর, ফযীলত দান কর এবং তাঁকে সেই
মাকামে মাহমুদের উপর অধিষ্ঠিত কর যার ওয়াদা তুমি করেছ।
‘দাওয়াতে তাম্মাহ’ এর মর্ম হলো তাওহীদের এ
আহবান যা পাঁচবর প্রত্যেক মসজিদ থেকে ধ্বনিত হয় এবং কিয়ামত পর্যন্ত হতে
থাকবে। ‘অসিলাম’ মর্ম হচ্ছে জান্নাতে আল্লাহর নৈকট্যের সেই মর্যাদা যা শুধু
নবী (স) লাভ করবেন।তিনি বলেন:
যখন তোমাদের মধ্যে কেউ মুয়াযযিনের আযান
শুনবে। তখন নিজেও তা বলবে, তারপর আমার উপর দরুদ পাঠাবে। (কারণ যে আমার উপর
একবার দরুদ পাঠাবে আল্লাহ তার উপর দশবার রহমত নাযিল করবেন।) তারপর সে
আল্লাহর কাছেআমার জন্যে ‘অসিলা’ চাইবে। এ হচ্ছে জান্নাতে এমন মর্যাদা যা
আল্লাহর কোন খাস বান্দার জন্যে নির্দিষ্ট। আমি আশা করি সে বান্দাহ আমিই
হবো। যে ব্যক্তি আমার ‘অসিলার’ জন্যে দোয়া করবে তার শাফায়াত করা আমার
ওয়াজেব হয়ে যাবে। (মুসলিম)।
মাকামে মাহমুদ’-এর মর্ম হলো গৃহীত হওয়ার
এমন এক উচ্চ মর্যাদা যার উপর অীধষ্ঠিত ব্যক্তি দুনিয়া এবং আখেরাতে ‘মাহমুদে
খালায়েক’ বা ‘সৃষ্টি প্রশংসিত হবেন। আল্লাহ কুরআনে বলেন-
(আরবী*************************)
অতিসত্তর তোমার রব তোমাকে ‘মাকামে মাহমুদের’ উপর অধিষ্ঠিত করবেন: (বনী ইসাইল-৭৯)।
৫. একামাতের জবাব দেয়া মুস্তাহাব, ওয়াজেব নয়। কোন সময় মেয়েলোক আযান দিলে তা পুনরায় দিতে হবে।
৬. কয়েকটি আযানের শব্দ কানে এলে মাত্র একটি জবাবই যথেষ্ট হবে। প্রত্যেক আযানের পৃথহক পৃথক জববের দরকার নেই।
৭. জুমার দিনে খুতবা আযানের জবাব দেয়া ওয়াজেব নয়, মাকরুহ নয়, বরঞ্জ মুস্তাহাব-(ইলমুল ফেকাহ)।
আযান ও মুয়াযযিনের রীতি পদ্ধতি
১. আযান পুরুষকে দিতে হবে। মেয়েলোকের আযান ঠিক হবে না। কোন ওয়াক্তে মেয়েলোক আযান দিলে তা পুনরায় দিতে হবে।
২. এমন লোকের আযান দিতে হবে যে শরীয়তের জরুরী মাসয়ালা সম্পর্কে অবহিত, নেক এবং পরহেযগার হয়। আওয়াজ খুব উচ্চ হওয়া ভালো।
৩. জ্ঞানী ও বিবেকবান লোকের আযান দেয়া উচিত। পাগল এবং হুশ কম এমন ব্যক্তির আযান মাকরুহ। এরুর অবুজ বালকের আযানও মাকরুহ।
৪. আযান মসজিদের বাইরে কোন উচ্চ স্থানে
কেবলামুখী হয়ে দেয়া উচিত। অবশ্যি জুমার দ্বিতীয় আযান যা খুতবার আগে দেয়া
হয়, তা মসজিদের মধ্যে দেয়া মাকরুহ নয়।
৫. আযান দাঁড়িয়ে থেকে দিতে হবে। বসে বসে আযান দেয়া মাকরুহ।
৬. আযান বলার সময় দু’হাতের শাহাদাত অঙ্গুলি কানের ছিদ্রের মধ্যে দেয়া মুস্তাহাব।
৭. আযানের শব্দগুলো থেমে থেমে দেয়া এবং
একামত অনর্গল বলা সুন্নাত। আযানের কথাগুলো এমনভাবে দম নিতে বলতে হবে যেন
শ্রোতা জবাব দিতে পারে।
৮. আযানে (****) বলার সময় ডান দিকে এবং
(****) বলার সময় বাম দিকে মুখ ফেরানো সুন্নাত। তবে খেয়ালা রাখতে হবে যে,
বুক এবং পায়ের পাতা কেবলার দিক থেকে ফির না যায়।
আযান ও একামতের মাসয়ালা
১. ফরযে আইন’ নামাযের জন্যে আযান সুন্নাতে
মুয়াক্কাদাহ, তা ওয়াক্তের হোক বা কাযা নামায, নামায পাঠকারী মুকীম হোক
অথবা মুসাফির সকল অবস্থায় আযান সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ। অবশ্যি সফরের অবস্থায়
যখন জামায়াতে যোগদানকারী সকল সাথী উপস্থিত থাকে তাহলে আযান মুস্তাহাব হবে,
সুন্নাতে মুয়াক্কাদা নয়।
২. নামাযের ওয়াক্ত হওয়ার পর আযান দিতে
হবে। পূর্বে আযান দিলে তা ঠিক হবে না। সময় হলে দ্বিতীয়বার আযান দিতে হবে তা
যে কোন সময়ের আযান হোক না কেন।
৩. আযান আরবী ভাষায় এবং ঐসব শব্দমালায়
বলতে হবে যা নবী (স) শিক্ষা দিয়েছেন। আরবী ভাষা ব্যতীত অন্য ভাষায় আযান
জায়েয হবে না এবং নবী (স)-এর শিখানো কথাগুলো বাদ দিয়ে অন্য কোন শব্দাবলী
দিয়ে নামাযের জন্যে ডাকা জায়েয হবে না। এসব অবস্থায় মানুষ আযান বুঝতে পেরে
জমায়েত হলেও আযান ঠিক হবে না। মসনূন তরীকায় আযান একান্ত জরুরী।
৩. আযান সব সময়ে জ্ঞানবান, বালেগ এবং
পুরুষকে দিতে হবে। স্ত্রীলোকের আযান মাকরুহ তাহরীমি। এমনটি পাগল ও
নেশাগ্রস্ত লোকের আগানও মাকরুহ। অবুঝ বালকের আযানও মাকরুহ। কোন সময়
মেয়েলোক, অথবা কোন পাগল বা কোন অবুঝ বালক আযান দিলে পুনরায় তা দিতে হবে।
৫. যে সব মসজিদে জামায়াতসহ নিয়মিত নামাযের
ব্যবস্থাপনা আছে, এবং নিয়ম মাফিক আযান একামাতের সাথে জামায়াত হয়ে গেছে,
সেখান দ্বিতীয়বার আযান ও একামত দিয়ে জামায়াত করা মাকরুহ। তবে যদি কোন
মসজিদে নিয়ম মাফিক জামায়াতের ব্যবস্থাপনা না থাকে, না সেখানে কোন নির্দিষ্ট
ইমাম আছে আর না মুয়াযযিন, তাহলে সেখানেও পুনরায় আযান ও একামত দিয়ে নামায
পড়া মাকরুহ নয় বরঞ্চ ভালো।
৬. ফরযে আইন নামায ব্যতীত অন্য সময়ে, যেমন জানাযা, ঈদ, ওয়াজেব ও নফল ও নামাযের আযান দেয়াঠিক নয়।
৭. আযান দেয়ার সময় কথা বলা অথবা সালামের
জবাব দেয়া দুরস্ত নয়। যদি হঠাৎ কেউ সালামের জবাব দেয় তো ঠিক আছে। কিন্তু
তারপর কথা বলা শুরু করলে তা পুনরায় আযান দিতে হবে।
৮. জুমার প্রথম আযান শুনার সাথে সাথেই সকল
কাজকর্ম ছেড়ে মসজিদে যাওয়া ওয়াজেব। আযান শুনার পর দস্তরু মতো কাজকামে রত
থাকা এবং কারবার করা হারাম।
৯. যখন কারো কানে আযান ধ্বনি পৌঁছবে, সে
পুরুষ বা নারী, অযুসহ হোক বা বেঅযুতে হোক, তার উচিত আযানের প্রতি মনোযোগ
দেয়া। যদি পথ চলা অবস্থায় হয়, তাহলে দাঁড়িয়ে পড়া মুস্তাহাব। আযান হওয়াকালে
তার জবাব দেয়া ব্যতীত অন্য কোন কাজে রত হওয়া ঠিক নয়। না সালাম দেবে, আর না
তার জবাব। কুরআন পড়তে থাকলে তা বন্ধ করতে হবে।
১০. যে ব্যক্তি আযান দেয়, একামত দেয়ার হক
তার। যদি সে আযান দিয়ে কোথাও চলে যায়, অথবা স্বয়ং চায় যে, অন্য কেউ একামাত
দিক তাহলে তার একামত দুরস্ত হবে।
১১. মুয়াযযেনকে যে মসজিদে ফরয পড়তে হবে তাকে আযান সে মসজিদেই দিতে হবে। দুই মসজিদে এক ফরয নামাযের জন্যে আযান দেয়া মাকরুহ।
১২. কয়েক মুয়াযযেনের এক সাথে আযান দেয়াও জায়েয।
১৩. বাচ্চা পয়দা হলে তার ডান কানে আযান এবং বাম কানে একামত দেয়া মুস্তাহাব।
আযানের জবাব দেয়া ওয়াজেব কিন্তু সাত অবস্থায় না দেয়া উচিত।
১. নামায অবস্থায়।
২. খুতবা শুনার সময়, তা জুমার হোক বা অন্য কোন খুতবা।
৩. হায়েয ও নেফাসের অবস্থায়।
৪. এলমে দ্বীন পড়া এবং পড়াবার সময়।
৫. বিবির সাথে সহবাসের সময়।
৬. পেশাব পায়খানার অবস্থায়।
৭. খানা খাওয়া অবস্থায়।
0 comments:
Post a Comment